খুব বেশি ভালবাসি

লেখকঃ নয়ন দেবনাথ


আমি তোমাকে ভালোবাসি
খুব বেশি ভালোবাসি।
কিন্তু, তোমাকে একথা কখনোই জানতে দেব না।
অব্যক্ত শোকে তুমি যখন অঝর ধারায় ঝরাবে অশ্রু,
আমি দূর থেকে তার সৌর্ন্দয্য উপভোগ করবো।
কাঁটায় কাঁটায় ভরিয়ে তুলবো তোমার যাত্রাপথ।
আকন্ঠ ব্যথায় তুমি যখন কাতরাবে
আমি তথন খুঁজে নেবো পৃথিবীর সমস্ত আনন্দ।

তুমি রাস্তায় বেরুলে
আক্রমন করবে শহরের সমস্ত অস্হির যন্ত্রণা।
"বাঁচাও বাঁচাও" বলে চিত্‍কার করবে তুমি।
আশ্রয় নিতে যাবে কোন নিরাপদ বাড়ির আঙ্গিনায়,
আমি তখন মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেবো।
তুমি চিত্‍কার করবে,
অসহায় ভাবে কাঁদবে।
আমি তখন নরম সোফায় বসে
মধুর সুরে উপভোগ করবো তোমার ভয়ার্ত কন্ঠ।

গ্রীস্মের কড়তাপে তুমি যখন
ক্লান্ত, শ্রান্ত হয়ে ঘরে ফিরবে,
আমি তখন বন্ধ করে দেবো রোমের এয়ারকন্ডিশন।
তুমি হতালায় মুশরে পড়বে,
অসস্হিতে ছুটাছুটি করবে।
আমি তখন শীতল হাওয়ায় বসে
গ্রীস্মের কড়তাপের কবিতা লিখবো।

আনমনে পথ চলতে গিয়ে তুমি যখন নর্দমায় পড়ে কাঁদায় সিক্ত হবে!
আমি তখন তোমাকে টেনে তুলব না।
তোমার কাঁদা মিশ্রিত মুখখানায় চাঁদের সৌর্ন্দয্য খুঁজে নেবো। তোমার ঘরের জানালার যে দিকটার পর্দা বাতাসে উড়ে,
সে দিকটায় নতুন জানালা কাটবো।
যখন ভয়ার্ত মধ্যরাতে বিভত্‍স কালো বিড়াল
সিলিং সহ ঝাপিয়ে পড়বে তোমার বিছানায়,
ভয়ে ভীত সহ কেঁপে উঠবে তোমার হৃদয় প্রাসাদ!
তুমি দৌড়ে চিত্‍কার করে পালাতে চাইবে।
কিন্তু, কিছুতেই দরজা খুলতে পারবে না।
আমি তখন দূরের জানালায় বসে সেই ছবি আঁকবো প্রশান্তির ক্যানভাসে।

আমি তোমাকে নিয়ে একদিন সূর্যোদয় দেখতে যাবো।
তুমি যখন সূর্যোদয়ের অপার সৌর্ন্দয্যে মুগ্ধ হয়ে স্নিগ্ধ প্রভাতের কবিতা শোনাবে!
আমি তখন মুখ ফিরিয়ে নেবো সূর্যাস্তের দিকে।
তুমি অসম্ভব হতাশায় অপলক তাকিয়ে থাকবে আমার দিকে! আমি তখন তোমার চোখে আগামী সকালের কষ্ট খুঁজে নেবো।
আমি তোমার সৌর্ন্দয্য খুঁজি না। খুঁজি তোমার কষ্ট, যন্ত্রণা, ব্যথা, হতাশা, ভয়।
যেগুলোর সাথে আমার নিত্য বসবাস।
আমি তোমাকে তার ভাগ দিতে চাই।
কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি খুব বেশি ভালোবাসি।


* ২১ ফাল্গুণ, ১৪১০ বঙ্গাব্দ।

কোন মন্তব্য নেই: